যে সাতটি কাজ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়

মানুষের কিছু অপরাধ তাকে ধ্বংস করে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর প্রিয় উম্মতদের বরাবরই সে ধরনের অপরাধ থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করতেন। আজ আমরা জানব এমন সাতটি ধ্বংসকারী বস্তু সম্পর্কে। যেগুলোর ব্যাপারে রাসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে সতর্ক করেছিলেন।

১. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা : রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ বলেন, যে লোক আমার সঙ্গে কাউকে শিরক করা ব্যতীত পৃথিবীতুল্য গুনাহ নিয়েও আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, তাহলে আমি তার সঙ্গে অনুরূপ পৃথিবীতুল্য মার্জনা নিয়ে সাক্ষাৎ করি। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭২৬)

২. জাদু করা : জাদুটোনা ইসলামের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ। তাই তা শিক্ষা করা বা জাদুকরদের বিশ্বাস করা হারাম। হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.) বলেন, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে—‘আমরা তোমাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। সুতরাং তোমরা কুফরি কোরো না।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১০২)

এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, জাদু শিক্ষা করা কুফরি। (ফতহুল বারি : ১০/২২৫)

৩. অন্যায়ভাবে কোনো মানুষকে হত্যা করা : অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা গোটা মানবতাকে হত্যার নামান্তর। তা যে পদ্ধতিতেই হোক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো প্রাণের বিনিময় অথবা জমিনে বিশৃঙ্খলা করা ব্যতীত কাউকে হত্যা করল সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল…। (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৩২)

৪. সুদ খাওয়া : ইসলাম ধর্মে জঘন্য একটি হারাম হলো সুদ। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের অসংখ্য আয়াতে সুদের ভয়াবহতা সম্পর্কে বান্দাকে সতর্ক করেছেন। এর প্রভাবে দুনিয়ায় অশান্তি সৃষ্টি হয়। এ কারণেই পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদাররা! আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমাদের যে সুদ বাকি আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা ঈমানদার হও। যদি তোমরা তা না করো, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৭৮-২৭৯)

৫. এতিমের মাল (অন্যায়ভাবে) ভক্ষণ করা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা এতিমদের ধনসম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে, তারা তো তাদের পেটে আগুন খাচ্ছে; আর অচিরেই তারা প্রজ্ব্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০)

৬. রণাঙ্গন থেকে পলায়ন করা : যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুপক্ষের ভয়ে রণাঙ্গন থেকে পলায়ন একটি জাতি ধ্বংস করে দেয়। এ কারণে মহান আল্লাহ মুমিনদের উদ্দেশে বলেন, ‘হে মুমিনরা, যখন তোমরা কাফির বাহিনীর মুখোমুখি হও, তখন তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন কোরো না (পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা কোরো না)।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ১৫)

যারা এ ধরনের পরিস্থিতিতে পলায়ন না করে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, আল্লাহ তাদের সাহায্য করেন। যার উদাহরণ বদর যুদ্ধ।

৭. সতীসাধ্বী নারীকে অপবাদ দেওয়া : কারো সম্পর্কে না জেনে তাকে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া কবিরা গুনাহ। যদি কেউ কোনো মুমিন সতী নারীর ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে, তা প্রমাণ করতে না পারে, তবে ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে অপবাদদাতা নিজেই ৮০ বেত্রাঘাত সাজার দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে যায়। তা ছাড়া এই ধরনের অপরাধ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। (বুখারি, হাদিস : ২৭৬৬)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *